স্বাধীন ইচ্ছা ও কার্যের অনুসারী কাদেরিয়াদের উত্তরাধিকারী হিসেবে মুতাজিলা গোষ্ঠী ইসলামি ধর্মতত্ত্ব দর্শনে প্রভূত প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়। মূলত হাসান আল বসরির সাহচর্য বঞ্চিত ওয়াসিল বিন আতা এবং তার অনুসারীদের দলত্যাগী বা মুতাজিলা নামে আখ্যায়িত করা হয়।
মুতাজিলা শব্দটি ‘ইতিজিলা’ শব্দ হতে উৎপত্তি হয়েছে। শিয়া সম্প্রদায়ের ষষ্ঠ ইমাম জাফর আল সাদিকের শিষ্য ওয়াসিল বিন আতা এই সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি প্রখ্যাত তাপস হাসান আল বসরির সান্নিধ্যে জ্ঞানচর্চার সুযোগ পান। উল্লেখ্য যে, হাসান আল বসরি একদিন শিষ্যদের সঙ্গে আলাপ করছিলেন যে, কেউ যদি কবিরা গুনাহ করে তাহলে সে আর কিছুতেই মুসলিম থাকবে না, কাফির হবে। খারিজগণ এক্ষেত্রে তাকে (কবিরা গুনাহকারী) কাফির বললেও মুতাজিলা সম্প্রদায় তাকে (কবিরা গুনাহকারী) বিধর্মী মনে করেন না। হাসান আল বাসরি তার বক্তব্য পেশ করার পূর্বেই ওয়াসিল বিন আতা মন্তব্য করেন যে, এরুপ ব্যক্তি কাফিরও নয় আবার মুসলিমও নয়। এটা শুনে হাসান আল বসরি বললেন, ‘ইতিজিলা আন্না’ অর্থাৎ সে আমার দলত্যাগ করেছে। এভাবে হাসান আল বসরির সাহচর্য হতে বঞ্চিত হয়ে ওয়াসিল বিন আতা এবং তার সঙ্গীগন দলত্যাগী বা মুতাজিলা নামে পরিচিত হয়।
ইসলামে উদ্ভুত উগ্রপন্থী ও কোরআন হাদিসের ব্যাখ্যা প্রদানকারী দলসমূহের মধ্যে মুতাজিলা অন্যতম। মুতাজিলা সম্প্রদায় ছিল মানবীয় যুক্তিবিদ্যা ও বিজ্ঞানসম্মত বিচার বুদ্ধির অনুসারী। আর এদের মূল উৎস হলো নিজস্ব জ্ঞানবুদ্ধি।