যার তলোয়ারের উত্থানে উদিত হয়েছিল মুসলিম বাহিনীর বিজয়ের আদিত্য।
কুস্তি, তরাবারি চালনা, উঠের উপর থেকে ধু ধু মরুর প্রান্থে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার ক্ষিপ্ত কৌশল রপ্ত করা নিয়ে প্রাথমিক জীবন শুরু হয়েছিল খালিদের। যুদ্ধ থেকে যুদ্ধ, যৌবনের দিনলিপি গুলো আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণে দারুণ ভাবে গুছানো ছিল। যার শৈশব কৈশোর কেটেছে ঝড় তুফানে তার বাঁধভাঙা যৌবন কী মহাপ্লাবন’কে উপেক্ষা করতে পারে? খালিদ বিন ওয়ালিদ ঠিক যেন এমনই, উহুদ থেকে মুতা'র যেখানেই যুদ্ধ অংশ নিতে ভূলে যাননি। সময়ের ব্যবধানে পক্ষ পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু কৌশল আজীবন অপরিবর্তিত ছিল। রণকৌশলের অনন্য সুনিপুণ সব যোগ্যতা তাকে সময়ের সেরা সমর নায়ক,যুদ্ধ বিজেতা আর ‘সাইফুল্লাহ’ বা আল্লাহর তরবারিতে পরিণত করেছিল।
শুরুর দিকে,
খালিদের জন্ম হয়েছিল আনুমানিক ৫৯০–৫৯৩ খ্রীঃ তৎকালীন মক্কার এক অভিজাত পরিবারে। পিতা ছিলেন বনি মখযুম গোত্রের প্রধান আল ওয়ালিদ। তদানীন্তন আরব অভিজাতদের চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী জন্মের পর শিশু ওয়ালিদকে রেখে আসা হয় দুধ মাতার দায়িত্বে। যারা ছিল মরুবাসী বেদুইন। মক্কার রুক্ষ শুষ্ক আবহাওয়ায় ঠিকে থাকার লড়াইয়ের হাতেখড়ি হয়েছিল অল্পবয়সেই। ৪/৬ বয়সেই নিজ গোত্রে চলে আসেন খালিদ। পরিবার বিত্তশালী হওয়ার দরুন আয় রোজগার নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন পড়েনি ওয়ালিদ পুত্রের। হয়তো এই অদৃশ্য সুযোগ খালিদ বিন ওয়ালিদের একজন মহাবীর হওয়ার যাত্রাকে তরান্বিত করেছিল। যুদ্ধের দুর্দান্ত সব কলা-কৌশল অর্জনে নিজের ধ্যান,জ্ঞান সপে দিয়েছিলেন ওয়ালিদ। যার ফল পেতেও বেশি বেগ পেতে হয়নি। স্বল্প সময়ে মক্কার কুরাইশদের মধ্যে নিজের সুদৃঢ় অবস্থান পাকাপোক্ত করে ফেলেন খালিদ বিন ওয়ালিদ। নিজেকে পরিনত করেন মক্কার কুরাইশদের দুর্ধর্ষ যোদ্ধা আর বাবার সুযোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে।
❐ মহাবীর খালিদ বিন ওয়ালিদ(রাঃ) ইসলাম ধর্ম গ্রহণ পূর্ববর্তী মক্কা,মদিনা–
তৎকালীন আরবের সমসাময়িক অনেক ঘটনা খালিদ বিন ওয়ালিদের জীবনের গতিবিধির উপর নিখুঁত প্রভাব ফেলেছিল। উল্লেখ্য মদিনাবাসী আর মক্কার কুরাইশ দের মধ্যে সংঘাত ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। যার প্রেক্ষিতে কুরাইশদের জনমনে মদিনার প্রতি আক্রমনাত্নক মনোভাব সহজাত হয়ে উঠেছিল।
কিন্তু কেন?
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) কর্তৃক মক্কায় ইসলামের প্রচার এবং প্রসারকে কুরাইশরা কখনো মেনে নেয়নি আর সহজভাবে গ্রহণ ও করেনি। তবে, তার সুনির্দিষ্ট অনেক কারন ছিল প্রথমত, কুরাইশরা মোহাম্মদ (সাঃ)কে নিছক ধর্ম প্রচারক মনে করতো না বিশেষ করে কুরাইশ নেতারা। তারা মহানবী সাঃ এবং উনার অনুসারীদের বিপ্লবী হিসেবে ধারণা পোষন করত। কুরাইশরা মুসলিম দের উত্থানকে নিজেদের ক্ষমতার জন্য হুমকি মনে করেছিল যার দরুন তারা মুসলিম দের ব্যাপারে ভীত ছিল।
মোহাম্মদ (সাঃ) এবং উনার অনুসারীরা কুরাইশ দের তিব্র নির্যাতনের মুখে মক্কা’কে ইসলাম প্রচারের জন্য সুবিধাজনক করে তুলতে পারেন নি। ফলসরুপ ইয়াসরিব বাসীর আমন্ত্রনে এবং ইয়াসিরিবে ধর্ম প্রচারের সর্বাপেক্ষায় অনুকূলতা পেয়ে সেখানে মহানবী সাঃ হিজরত করেন। মহানবী (সাঃ) পদচারণে ততোদিনে ইয়াসরিব পরিনত হয় "মদিনাতুন্নবি" বা নবীর শহরে। একজন বিচক্ষণ নেতা হিসেবে মদিনার সনদের মাধ্যমে মোহাম্মদ সাঃ নিজেকে আসিন করেন মদিনার সর্বোচ্চ ক্ষমতায়। মদিনা রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে খুব স্বল্প সময়ে।
মুসলিমদের তুমুল জনপ্রিয়তা, ক্ষমতা, গ্রহণ যোগ্যতা আর অগ্রগতি পৌত্তলিক’তায় বিশ্বাসী মক্কার কুরাইশ নেতাদের ঈর্ষান্বিত করে তুলে এবং মদিনার মতো গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক অবস্থানের অধিপত্যে মুসলিমদের কখনো সহ্য করেনি কুরাইশ’রা । যার ফলে অনিচ্ছা সত্ত্বেও মুসলিম বাহিনী বাধ্য হয় কুরাইশ দের সাথে বদর, উহুদ আর খন্দকের যুদ্ধে লড়তে। তখন'ও খালিদ বিন ওয়ালিদ মুসলিম দের বিপক্ষে ছিলেন অস্র ব্যবহার করেছেন মুসলিম দের বিরুদ্ধেই।
❐ উহুদের যুদ্ধে খালিদ।
উহুদের প্রান্তে সেদিন খালিদ বিন ওয়ালিদের আকস্মিক আক্রমণ কোনটাসা করে ফেলে মুসলিম বাহিনী’কে। হতবাক মুসলিম বাহিনী উহুদের ময়দানে স্বয়ং সাক্ষী হয় এক অকুতোভয় রণ-শৈলী’র। মাস খানিক আগে মুসলিম বাহিনীর মাত্র ৩১৩ জন সৈন্যের সাথে বদর যুদ্ধে পরাজয়ের স্বাধ পায় কুরাইশ'রা। বদরে নিহত হন কুরাইশ নেতা আবু জেহেল। পরাজয়ের গ্লানি আর মদিনার উঠতি প্রভাব দিনের পর দিন শংকিত করে তুলে মক্কার কুরাইশ দের। যার অনিবার্য পরিণতি গড়ায় উহুদের যুদ্ধে।
আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে থাকা ৩০০০ কুরাইশ সৈন্যের বিপরীতে মোহাম্মদ (সাঃ) ১০০ জন বর্মধারী ৫০ জন তীরন্দাজ সহ মোট ১০০০ সৈন্য নিয়ে উহুদ উপত্যকার উদ্দেশ্য যাত্রা শুরু করেন।
পথিমধ্যে মহানবী (সাঃ) সাথে থাকা বিশ্বাস ঘাতক আব্দুল্লাহ বিন উবাই তার ৩০০ জন সৈন্য নিয়ে মুসলিম বাহিনী’কে প্রত্যাখ্যান করে। শেষমেশ মুসলিম বাহিনীর সৈন্য সংখ্যা দাঁড়াল ৭০০ জনে।
উল্লেখ্য আব্দুল্লাহ বিন উবাই কখনো মদিনার ক্ষমতায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) এবং উনার অনুসারীদের সহ্য করে নি।
মাত্র ৭০০ জন সৈন্য নিয়ে কুরাইশ দের ৩০০০ বাহিনীর মোকাবিলার জন্য অগ্রসর হন মোহাম্মদ (সাঃ) অবশেষে মুসলিম বাহিনীর পাশের গিরিপথ পাহারা দেয়ার জন্য মোহাম্মদ (সাঃ) আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়েরের নেতৃত্বে ৫০ জন তীরন্দাজ নিযুক্ত করেন এবং আদেশ জারি করেন পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত গিরিপথ ত্যাগ না করার।
যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকে মুসলিম বাহিনী ধারাবাহিক সাফল্য অর্জন করে এবং কুরাইশ বাহিনী যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে পলায়ন শুরু করে। অপরদিকে যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর জয় প্রায় নিশ্চিতের আশংকায় গিরিপথরক্ষীরা জয়ের আনন্দে কুরাইশদের পরিত্যক্ত ধনসম্পদ সংগ্রহের জন্য রাসুল(সাঃ) নির্দেশনার পরোয়া না করেই গিরিপথ ত্যাগ করে।
কিন্তু তখনও কুরাইশ বাহিনীর হয়ে ময়দানে ছিলেন খালিদ বিন ওয়ালিদ। অরক্ষিত গিরিপথ দিয়ে মুসলিম বাহিনীর উপর পিছনের দিক থেকে আচমকা ঝাপিয়ে পড়েন খালিদ। আতর্কিত হামলায় মুসলিম বাহিনী বিপর্যস্থ হয়ে পরে । মহানবী (সাঃ) আহত হয়ে জ্ঞান হারান এবং পতাকাবাহী মুজাহিদ মুসাব,হামজা (রাঃ) সহ অসংখ্য সাহাবী শাহাদাত বরন করেন। হঠাৎ যুদ্ধের ময়দানে গুজব উঠে মোহাম্মদ (সাঃ) নিহত হয়েছেন । এই অনিশ্চিত আনন্দে আপ্লূত হয়ে খালিদ বিন ওয়ালিদের কুরাইশ বাহিনী যুদ্ধের ময়দান থেকে মদিনা দখল না করেই মক্কা ফিরে যায়। সেদিনকার ফলাফল অমিমাংসিত থাকলেও খালিদ বিন ওয়ালিদের যুদ্ধের সাথে কৌশলের মিমাংসা ঠিকই হয়েছিল।
❐ ইসলাম ধর্মে খালিদ বিন ওয়ালিদ।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আরব উপদ্বীপে ইসলামের যে বটবৃক্ষ রোপন করেছিলেন তার সু-শীতল ছায়াতলে ঠাই হয়েছে এমন দিগ্বিজয়ী বীরদের হয়তো গুনে শেষ করা যাবে না। তবে অসংখ্য অগনিতের মধ্যে খালিদ ছিলেন একের ভিতর অনেক।
যেই পাল আরব থেকে যাত্রা শুরু করেছিল উমর, আলীর ন্যায় সেই পালে হাওয়া দিতে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেন’নি খালিদ বিন ওয়ালিদ। হুদায়বিয়ার পর মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর চিন্তা চেতনাকে গভীর ভাবে অনুদাবন করতে পেরেছিলেন তিনি । আসলে খালিদ বিন ওয়ালিদ কুরাইশদের পৌত্তলিক’তাকে অতটা হৃদয়ে ধারণ করতেন না। অনেক রাজনৈতিক সমীকরণ উপেক্ষা করে খালিদ বিন ওয়ালিদ ও চলে আসেন ইসলামের পতাকা’তলে। আর ইসলাম তাকে আমুল পাল্টে দেয়। পরবর্তী কালে খালিদ পরিণত হয়েছিলেন ইসলামের শক্তিশালী হাতিয়ারে। আপাতদৃষ্টিতে খালিদের ইসলাম গ্রহণ অতি শীঘ্র মনে হলেও এটা ছিল খালিদ বিন ওয়ালিদের ইসলামের উপর দীর্ঘ দিনের অনুসরণের ফল।
❐ মুতা’হ যুদ্ধের বীর সেনানী খালিদ বিন ওয়ালিদ।
খালিদ বিন ওয়ালিদ ততোদিনে মুসলিম বাহিনীর একজন সুযোগ্য সৈনিক। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) প্রায়ই আশেপাশের বিভিন্ন অঞ্চলে মদিনা থেকে বিভিন্ন গোত্র প্রধানদের কাছে দূতের মাধ্যমে ইসলামের বাণী লিখে চিঠি পাঠাতেন। একদিন চিঠি পাঠানো হল বুসরার গাসসান গোত্র প্রধানের কাছে। কিন্তু চিঠি যথাস্থানে পৌছে নি! খবর এলো বার্তাবাহক’কে পথিমধ্যে আক্রান্ত করা হয়েছে। রোমান সম্রাটের শুরাহবিল বিন আমর নামের এক প্রতিনিধি সেই বার্তাবাহক’কে ধরে নিয়ে যায় এবং শারীরিক নির্যাতন সহ তাকে হত্যা করে। সেই সময় দূত হত্যাকে চরম অপমানজনক এবং অসৌজন্যমূলক আচরণ বলে ভাবা হতো সাথে যুদ্ধ আহ্বানের সাংকেতিক চিহ্ন হিসেবে বিবেচনা করা হতো। যা পরবর্তীতে মুসলিম বাহিনী’কে মুতা’হ যুদ্ধে উষ্কে দেয়। অসাধারণ সব গুনাবলি থাকা স্বত্তেও খালিদ খুব সাধারণ সৈন্যের ন্যায় মুতা'হ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ইতিপূর্বে মহানবী (সাঃ) একেকজনের মৃত্যুর পর সেনাপ্রধান হিসেবে নির্বাচিত করে দেন যায়েদ বিন হারিস (রাঃ), জাফর এবং আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা (রাঃ)কে। রোমান দের লক্ষাধিক সৈন্যের বিপরীতে মুসলিম বাহিনীতে সৈন্য সংখ্যা ছিল মাত্র তিন হাজার। মাআন নামক এলাকায় দুই রাত অতিবাহিত করার পর মুসলিম বাহিনী বালকার দিকে অগ্রসর হয়। অন্যদিকে রোমান বাহিনী হিরাক্লিয়াসের নেতৃত্বে বিশাল সেনা বহর নিয়ে এগিয়ে আসলে মুসলিম বাহিনী মুতা নামক জায়গায় সমবেত হয়। হাজার খানিক মুসলিম সৈন্য লক্ষাধিক রোমানদের বিরুদ্ধে জড়িয়ে পরে এক অকল্পনীয় রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে। যুদ্ধে এগিয়ে যান যায়েদ বিন হারিস। বীরত্বের কোনও ঘাটতি রাখেন নি। পুরোদমে যুদ্ধ করে শাহাদাত বরন করেন। পরবর্তী দায়িত্ব এসে বার্তায় জাফর (রাঃ) কাছে। খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) সহ অন্যান্যরা ব্যাস্ত ছিলেন রোমানদের উপর আক্রমণ চালিয়ে যেতে। পালাক্রমে জাফর (রাঃ) ও শাহাদাত বরন করেন। জানা যায় জাফর (রাঃ) যুদ্ধের ময়দানে ডান হাত কেটে যায়, বাঁ হাতেই লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন। শাহাদাতের পর জাফর (রাঃ) শরীরে ৯০ টির মতো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছিল। ধর্মের জন্য ত্যাগের এমন নিদর্শন পৃথবীর ইতিহাসে বিরল। এরপর আব্দুল্লাহ বিন রাওয়াহা (রাঃ) ও বীর বিক্রমে যুদ্ধ করে শহীদ হন। মুসলিম বাহিনী নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়ে! তবে উপায় কী? আছেন, খালিদ বিন ওয়ালিদ আছেন। সাহাবারা পরামর্শ করে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব আরোপ করেন খালিদ বিন ওয়ালিদের উপর। ওয়ালিদের দায়িত্ব গ্রহনের পরেই শুরু হয় রোমান বাহিনীর উপর তিব্র আক্রমণ। অবশ্য একজন দক্ষ সমরবিদ হিসেবে খালিদ পূর্বের তিন জনের চেয়ে আলাদা যুদ্ধ কৌশল অবলম্বন করেন। তিনি আক্রমণে পরিবর্তন আনেন ফলে পর্যদুস্ত হতে বাধ্য হয় রোমান বাহিনী। খালিদ মুসলিম বাহিনীর দুই পার্শ্বের, পিছনের এবং সামনের সৈন্যদের অবস্থান পাল্টে তিনি মধ্যভাগ থেকে আক্রমণ করেন। খালিদ বিন ওয়ালিদের প্রবল আক্রমণের মুখে রোমান বাহিনী পিছু হাটতে বাধ্য হয়। তিনি এতটাই পরাক্রম দেখান যে, “মুতা’হ যুদ্ধের দিনে আমার হাতে নয়টি তলোয়ার ভেংগেছে। এরপর আমার হাতে একটি ইয়েমেনী ছোট তলোয়ার অবশিষ্ট ছিল”।
[ স্বয়ং খালিদ বিন ওয়ালিদ রাঃ থেকে বর্নিত। ]
আবার পাল্টা আক্রমণের শিকার হয় মুসলিম বাহিনী তখন বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে বেশি সময় নেন’নি ওয়ালিদ। তিনি যুদ্ধ করতে করতে রোমান বাহিনী’কে ধিরে ধিরে মরুভূমির দিকে নিয়ে আসেন যেখানে যাওয়া মানে রোমানদের জন্য নিশ্চিত মরণ ফাঁদ হয়তো রোমানদের কবর রচিত হতো সেখানে। খালিদ বিন ওয়ালিদের এই কৌশল সম্পর্কে টের পেয়ে যায় রোমান বাহিনী আবার পিছু হাটে। এভাবেই দুই বাহিনীর নিরাপদ দূরত্ব সৃষ্টির পর মুতা'হ যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে।
❐ মহাবীর খালিদ বিন ওয়ালিদের পুরো জীবন নিয়ে বিচার বিশ্লেষণের প্রয়োজন নেই শুধুমাত্র মুতা’হ যুদ্ধের প্রেক্ষাপটই তাকে সময়ের সেরা সমর নায়কের খেতাব এনে দেয়ার জন্য যথেষ্ট।
❐জীবনের শেষ দিনগুলো,
শাহাদতবরণের তীব্র ইচ্ছে যার প্রতিটি স্পন্দনে ছিল সেই খালিদ বিন ওয়ালিদের সাভাবিক মৃত্যু যেন অনেকটাই অগ্রহণযোগ্য! এরকম সাভাবিক মৃত্যুর জন্য শেষ অব্দি যথেষ্ট আফসোস ভরা হৃদয় ছিল খালিদ বিন ওয়ালিদের। "কেনও আমার জন্য শাহাদাত নয়? শরীরের প্রতিটি ক্ষত’ই তো আঘাতের" উত্তরে ছিল আপনি আল্লাহর তরবারি আর আল্লাহর তরবারি কী যুদ্ধ ক্ষেত্রে ভাঙতে পারে! মহানায়ক খালিদের প্রস্থানে সে’দিন আরব উপদ্বীপ এক বিশ্ব বরণ্য সমরবিদ’কে হারিয়ে ছিল।
মানব সভ্যতার ইতিহাসে খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) একবার’ই এসেছিলেন আর আসবেন না তবে সৃষ্টি করে গেছেন এক অমর ইতিহাস যার জীবনের উদাহরণ যুগের পরে যুগ প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে কালের সাক্ষী হয়ে থাকবে আর একটি জাতি বলবে আমাদের খালিদ বিন ওয়ালিদ ছিলেন। গুটিকয়েক যুদ্ধে খালিদ বিন ওয়ালিদের সম্পৃক্ততা এবং কারণ তুলে ধরা হয়েছে বস্তুত তিনি বিশ্বখ্যাত আরও অসংখ্য যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন
লিখেছেন— Nur Ahmed