তিনি ছিলেন মুসলিম ইতিহাসের বরেণ্য বীরশ্রেষ্ঠদের একজন, যার দৃঢ়তা ছাড়িয়ে যেত গগনচুম্বী পর্বতকেও, সুউচ্চ সমুদ্রের অপ্রতিরোধ্য ঢেউ যার বীরত্বে এসে থমকে যেত, উন্মুক্ত ক্রুসেডে ক্রুসেডারদের আতঙ্ক, রণক্ষেত্রে অদম্য এক সমরনায়ক, তাঁর আগ্নেয়গিরির মত উত্তাপ ছড়ানো তরবারির ঝলকানিতে কেঁপে উঠতো কাফেরদের অন্তরাত্মা।
তার মৃত্যুতে সেদিন সমগ্র মুসলিম বিশ্বের উপর নেমে এসেছিল শোকের মাতম, আকাশ বাতাস সব ভারী হয়ে উঠেছিল।
ঐতিহাসিক আমীর আলী বলেনঃ
"তাঁর মৃত্যু ইসলাম ও মুসলিম জাহানের জন্য এমন একটি বিপর্যয় যা প্রথম চার খলিফার পর আমরা ভোগ করিনি। প্রাসাদ, সাম্রাজ্য এবং সারা দুনিয়া দুঃখে মুহ্যমান হয়ে যায়; সমগ্র নগরী শোকে নিমজ্জিত হয় এবং ক্রন্দন ও বিলাপ করতে করতে তাঁর লাশের অনুগমন করে।"
ঐতিহাসিক গিবন বলেনঃ
''স্বল্প অথচ যুগসন্ধিক্ষণে মহানুভবতা ও চারিত্রিক কাঠিন্যের দ্বারা তিনি ইসলামকে রাজনৈতিক অধঃপতনের হাত থেকে রক্ষা করেন।''
১১৯৩ সালের ৪ মার্চ ইন্তেকাল করেন ইসলামের ইতিহাসের মহাবীর, ক্রুসেডারদের কবল থেকে জেরুজালেম পুনরুদ্ধারকারী সুলতান গাজী সালাহউদ্দীন আল আইয়ুবী রাহিমাহুল্লাহ্।
সালাহউদ্দিন আইয়ুবী শুধু বীর যোদ্ধাই ছিলেন না, তিনি দেশপ্রেমিক, ধার্মিক এবং ন্যায়পরায়ণ সুলতান হিসাবে ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। এমনকি খ্রিস্টান শত্রুরাও তার মহানুভবতার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে। ইংরেজদের লেখায় এর প্রমাণ পাওয়া যায়। তার মহানুভবতার জন্য পশ্চিমা বিশ্ব তাকে সম্বোধন করে সালাদিন দ্যা গ্রেট তথা মহান সালাদিন নামে।
.....
একসময়কার জৌলুস হারিয়ে নাম আর খলিফা পদবী নিয়ে তখনো নির্জীব প্রাণীর মত বিদ্যমান ছিলো আব্বাসীয় খিলাফত। সকল পরাক্রম হারিয়ে, অভ্যন্তরীণ নানান সংঘাত ষড়যন্ত্রে আক্রান্ত, সিংহাসন নিয়ে চলা গৃহযুদ্ধে বিশৃঙ্খল হয়ে এককালের পরাক্রমশালী সেলজুক সাম্রাজ্য তখন বিভক্ত হয়ে পতনের দ্বারপ্রান্তে।
সময়টা ১০৯৫ সাল, পোপ আরবানের আহ্বানে খ্রিস্টান শক্তি প্রায় ১০ লক্ষ সৈন্যের এক বিশাল ক্রুসেডার বাহিনী প্রস্তুত করে জেরুজালেম অভিমুখে যাত্রা করে। পথিমধ্যে অনেক যুদ্ধ, জয় পরাজয়ের পর অবশিষ্ট বাহিনী অবশেষে ১০৯৯ সালে নামধারী কিছু মুসলিম শাসকের সহায়তায় ক্রুসেডাররা সমগ্র সিরিয়া ও ফিলিস্তিনের দখল নিয়ে নেয়।
৭ই জুন তারা জেরুজালেমে বাইতুল মোকাদ্দাস অবরোধ করে এবং ১৫ই জুলাই তারা সফলভাবে জেরুজালেমে প্রবেশ করে। পবিত্র ভূমি আল কুদসে ৪৬২ বছরের মুসলিম শাসনের সমাপ্তি ঘটে।
সেদিন(১৫ই জুলাই) ক্রুসেড যোদ্ধারা জেরুজালেমে রক্তের বন্যা বইয়ে দেয়। শহরে কী নারী, কী পুরুষ, কী শিশু, কী বৃদ্ধ -যাকেই পাওয়া গেছে তাকেই হত্যা করা হয়েছে। বহমান রক্তে নাকি সেদিন ঘোড়ার খুর পিছলে যাচ্ছিল। সেদিন প্রায় ৭৫ হাজার মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হয় যাদের অধিকাংশই ছিলো মুসলিম। ইউরোপীয়রা প্রতিষ্ঠা করে কিংডম অব জেরুজালেম। সকল মসজিদ বন্ধ করে দেয়া হয়, মুসলিম ও ইহু*দিদের ওপর চলতে থাকে অকথ্য নির্যাতন। যুগের পর যুগ কেটে যায়, কোনো মুসলিম শাসকের জেরুজালেম পুনরুদ্ধারের সামর্থ্য হয়নি।
ঘটনার সূত্রপাত ১১৮৭ সালের জানুয়ারিতে, জেরুজালেমের ভারপ্রাপ্ত রাজা রেনল্ড পূর্বে সালাহউদ্দীন আইয়ুবীর সাথে হওয়া শান্তিচুক্তি ভঙ্গ করে একটি হজ্জ কাফেলা আক্রমণ করে বসে এবং ব্যাপক লুটতরাজ ও নির্যাতন চালিয়ে কাফেলার সবাইকে বন্দী করে জেলে প্রেরণ করে। রেনল্ডের উদ্দেশ্য ছিলো সালাহউদ্দীনকে যুদ্ধে নামানো।
অবশেষে ১১৮৭ সালে হাত্তিনের যুদ্ধে উভয় বাহিনী পরস্পরের মুখোমুখি হয়। সুলতান সালাহউদ্দীনের মুজাহিদ বাহিনী ক্রুসেডারদের শোচনীয়ভাবে পরাজিত করেন।
বন্দী দুই সেনাপতিকে সুলতান সালাহউদ্দীনের সামনে আনা হলে তিনি তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করেন এবং বরফ কুচি পান করতে দিয়ে অতঃপর ইসলামের দাওয়াত দেন। কিন্তু রাজা রেনল্ড ঔদ্ধত্য দেখিয়ে রাসূল সাঃ কে গালি দেয়। এতে সালাহউদ্দীন ক্ষুদ্ধ হয়ে সাথে সাথে তার গর্দান উড়িয়ে দেন। এই দৃশ্য দেখে পাশের সেনাপতি ভয় পেয়ে যায় যে তার সাথেও এটা করা হতে পারে। সালাহউদ্দীন তাকে অভয় দিয়ে বলেন, যুদ্ধে বন্দী কোনো সেনাপতিকে হত্যার নিয়ম নেই; কিন্তু সে তার সকল সীমা অতিক্রম করে ফেলেছিল। এরপর সালাহউদ্দীনের বাহিনী জেরুজালেমের দিকে যাত্রা করে।
২০শে সেপ্টেম্বর মুসলিম বাহিনী জেরুজালেম অবরোধ করে এবং শহরের প্রতিরোধ শক্তি ভেঙে দিয়ে ২রা অক্টোবর মুসলিম মুজাহিদ বাহিনী মহা আনন্দে প্রবেশ করে পবিত্র ভূমি আল কুদসে, প্রবেশ করে দীর্ঘ প্রায় ৯০ বছর পর। এই ৯০ বছরে এখানে একটিবারের জন্য আল্লাহু আকবার' ধ্বনি উচ্চারিত হতে দেয়া হয়নি। অর্থাৎ দীর্ঘ ৯০ বছর পর জেরুজালেম আবার পুনরুদ্ধার করেন মুসলিম সেনাপতি, অকুতোভয় সেনানায়ক, সুলতান গাজী সালাউদ্দীন আল আইয়ুবী। ঝড়গতি সম্পন্ন, আপোষহীন, অকুতোভয় সালাহউদ্দীন আইয়ুবী যখন ইসলামের তরবারি হাতে আবির্ভূত হন তখন ক্রুসেডের সাজানো কৌশল বারেবারে কেপে উঠে। চক্রান্তের সকল জাল ছিঁড়ে জেরুজালেম ছিনিয়ে এনে শত বছর পর আবার মুসলমানদের হৃদয়ে প্রশান্তি নিয়ে আসেন গাজী সালাউদ্দীন আইয়ুবী।
বিজয়ের পর মুসলিম বাহিনী শহরে প্রবেশ করে ক্রুসেডারদের মত কোনো হত্যাযজ্ঞ চালায়নি, কেবল যারা যুদ্ধাপরাধ করেছে তাদের বিচার করা হয়। তখনকার অনেক খ্রিস্টান অধিবাসীরা আতঙ্কিত হয়ে উঠে এটা ভেবে যে, তারা যে নৃশংসতা মুসলিমদের ওপর চালিয়েছে মুসলিমরাও হয়ত এমনটা করবে; এটা ভেবে অনেকেই আত্মহত্যা করে, অনেক খ্রিস্টান নারীরা নিজেরাই তাদের চুল কেটে ফেলে।
কিন্তু হযরত ইউসূফ আঃ এর তার ভাইদের প্রতি ক্ষমাসুন্দর সেই উক্তি, মক্কা বিজয়ের পর রাসূল সাঃ এর ক্ষমাসুলভ সেই ঐতিহাসিক ভাষণের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়ে, অনুসরণ করে বিজয়ীর বেশে জেরুজালেমে প্রবেশের পর সেখানকার অধিবাসীদের উদ্দেশ্য করে হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাঃ যে উক্তি করেছিলেন, সুলতান সালাহউদ্দীন আল আইয়ুবী যেন তারই পুনরাবৃত্তি করলেন। তিনি শহরের সকল অধিবাসীদের জানমালের নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণ করলেন, বন্দী খ্রিস্টান নারী ও শিশুদের বিনা মুক্তিপণে মুক্তি দিলেন, বন্দী খ্রিস্টান সৈন্যদের নামমাত্র মুক্তিপণে মুক্তি দিলেন। তিনি কোন খ্রিস্টান বন্দিকে হত্যা করেননি; বরং তাদের মুক্তি দিয়ে ক্ষমার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন যা ইতিহাসে বিরল। এজন্য আজও খ্রিস্টান ঐতিহাসিকরা তাকে সালাদিন দ্যা গ্রেট নামে অভিহিত করে।
ক্রুসেডাররা কখনো ভাবতেও পারেনি সালাহউদ্দীনের উত্থান ঘটেছে পৃথিবীর ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দেয়ার জন্য।
সালাহউদ্দীন আল আইয়ুবীর এই মহাবিজয়ের সংবাদ ছড়িয়ে পৃথিবীর প্রতিটি ইঞ্চিতে, মুসলিম বিশ্বে আনন্দের জোয়ার বয়ে যায়। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে পড়ে ইউরোপের সকল খ্রিস্টানরা।
পোপ ২য় আরবান হার্ট অ্যাটাক করে মারা যায়। এরপর পরবর্তী পোপ আরবানুসের আহ্বানে সকল খ্রিস্টান শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয় মুসলিমদের বিরুদ্ধে।
ইংল্যান্ডের রাজা রিচার্ড, জার্মান সম্রাট ফ্রেডেরিখ ও ফ্রান্সের সম্রাট ফিলিপ অগাস্টাসের নেতৃত্বে ৮ লাখ সৈন্যের(মতান্তরে ৬ লাখ) বিশাল বাহিনী খ্রিস্টানদের পবিত্র স্থান আক্রে'তে মুসলিমদের অবরোধ করে।
১১৮৯ খ্রিস্টাব্দের ১৩ই আগস্ট থেকে ১১৯২ খ্রিস্টাব্দের ৩রা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় তিন বছর মেয়াদী ৮ লাখ সৈন্যের এই বিশাল অবরোধ সুলতান সালাহউদ্দীন আইয়ুবী মাত্র ২০ হাজার(মতান্তরে ৩০ হাজার) সৈন্য দিয়ে প্রতিরোধ করেন। অবশেষে খ্রিস্টান বাহিনী ১১৯২ খ্রিস্টাব্দের ৯ই অক্টোবর অবরোধ তুলে নিয়ে নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে বাধ্য হয়। এরপর থেকে শতশত বছর কোন খ্রিস্টান সম্রাট শত চেষ্টা করেও বাইতুল মুকাদ্দাস আর দখল করতে পারেনি।
এই মহাবিজয়ের পর ১১৯৩ সালের ৪ঠা মার্চ সুলতান সালাহউদ্দীন আল আইয়ুবী দামেস্কে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
মহান এই সুলতানের সম্পদের প্রতি কোনো লোভ ছিলো না। জীবদ্দশায় তার ব্যক্তিগত সম্পদের মধ্যে ছিলো ২০ টুকরো স্বর্ণ ও ৪০ টুকরা রৌপ্য যা তিনি গরীব দুস্থূদের মাঝে দান করে যান। পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে তিনি পবিত্র হজ্জ'ও পালন করতে পারেননি। মৃত্যুর পর তার কাছে ১টি দিনার ও ৪৭ দিনার ছাড়া কিছুই পাওয়া যায়নি।
পর্যটক আব্দুল লতিফ বলেনঃ ''সুলতান জ্ঞানীদের সাথে আলোচনায় লিপ্ত থাকতেন প্রায় সময়ই। সৈন্যদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলয়ে কাজ করতেন। জেরুজালেমের চারদিকে পরিখা খননের সময় তিনি নিজের কাঁধে পাথর বয়ে নিয়ে যান।''
বর্তমান ইরাকের টাইগ্রিস বা দজলা ও ইউফ্রেটিস বা ফোরাত নদী দুটির মধ্যবর্তী অঞ্চলে গড়ে উঠা ইরাকের(মেসোপটেমিয়া) তিকরিত শহরে ১১৩৭ সালে জন্ম গ্রহন করেন সালাহউদ্দীন ইউসুফ ইবনে আইয়ুবী। তার ব্যক্তিগত নাম ইউসুফ, সালাহউদ্দিন হল লকব যার অর্থ “বিশ্বাসের ন্যায়পরায়ণ”। তিনি ছিলেন মিশর ও সিরিয়ার প্রথম সুলতান এবং আইয়ুবীয় রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। ক্ষমতার সর্বোচ্চ শিখরে তার সালতানাতে মিশর, সিরিয়া, মেসোপটেমিয়া(ইরাক), হেজাজ, ইয়েমেন এবং উত্তর আফ্রিকার অন্যান্য অংশ অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ক্রুসেডের ইতিহাস অনেক দীর্ঘ। হাজার বছর ধরে চলছে এ ক্রুসেড। গাজী সালাউদ্দিন আইয়ুবী ক্রুসেডের বিরুদ্ধে যে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন তা বিশ্বকে হতবাক করে দিয়েছিল। কেবল সশস্ত্র সংঘাত নয়, কূটনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ভাবেও সে যুদ্ধ ছিল সর্বপ্লাবী। ইসলামকে পৃথিবীর বুক থেকে মুছে ফেলার চক্রান্তে মেতে উঠেছিল খ্রিষ্টানরা। একে একে লোমহর্ষক অসংখ্য সংঘাত ও সংঘর্ষে পরাজিত হয়ে বেছে নিয়েছিল ষড়যন্তের পথ। মুসলিম দেশগুলোতে ছড়িয়ে দিয়েছিল গুপ্তচর বাহিনী। ছড়িয়ে দিয়েছিল মদ ও নেশার দ্রব্য। বেহায়াপনা আর চরিত্র হননের স্রোত বইয়ে দিয়েছিল মুসলিম দেশগুলোর সর্বত্র। একদিকে সশস্ত্র লড়াই, অন্যদিকে কুটিল সাংস্কৃতিক হামলা- এ দু’য়ের মোকাবেলায় রুখে দাঁড়াল মুসলিম বীর শ্রেষ্ঠরা। তারা মোকাবেলা করল এমন সব অবিশ্বাস্য শ্বাসরুদ্ধকর ঘটনার, মানুষের কল্পনাকে যা হার মানায়।
সুলতান আইয়ুবী কর্তৃক বাইতুল মুকাদ্দাস নিয়ন্ত্রণে নেয়ার প্রায় ৮০০ বছর পর এবং ইসলামী খিলাফত(উসমানীয় খিলাফত) ধ্বংসের ৪৩ বছর পর মুসলমানরা প্রত্যক্ষ করল এক বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক ঘটনা। মুসলিম বিশ্বের পারস্পরিক অনৈক্য ও দুর্বলতার ফলে পবিত্র বাইতুল মুকাদ্দাস আর মসজিদুল আকসা আবার চলে গেল বিধর্মীদের হতে। খ্রিস্টানদের মদদে সেখানে কর্তৃত্ব নিল অভিশপ্ত ইহু*দী জাতি। ৯০০ বছর আগের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটল সেই পবিত্র ভূমিতে। মুসলমানদের রক্তে নতুন করে ভিজতে শুরু করল ফিলিস্তিনের মাটি। যা এখনো বিরাজমান। আজ শুধু সিরিয়া, ফিলিস্তিন নয় পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের মুসলিম অন্তরাত্মা প্রতিনিয়ত ক্রন্দন করছে একজন সালাহউদ্দীন আইয়ুবীর জন্য ...
বই: সুলতান সালাউদ্দিন আইয়ুবী
লেখক: ড. আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবি